যে ঘটনা আপনার চোখ খুলে দেবে: মায়ের এক ফোঁটা দুধের ঋণ এবং নবীর (সাঃ) কান্না

যে ঘটনা আপনার চোখ খুলে দেবে: মায়ের এক ফোঁটা দুধের ঋণ

মায়ের অভিশাপে যুবকের হাতে পচন ধরেছিল এবং স্বয়ং নবী (সাঃ) দোয়া করেও তার কবরের আজাব বন্ধ করতে পারেননি। হৃদয়বিদারক সেই ঘটনাটি জানুন।

ভূমিকা: বাবা-মায়ের মর্যাদা

আমাদের জীবনে বাবা-মা কত বড় নিয়ামত, তা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি? যে মা আমাদের আদর করে, চুমু খেয়ে বড় করেছেন, সেই মায়ের মনে কষ্ট দিলে তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে? সম্প্রতি প্রখ্যাত আলেম মুফতি নাছির উদ্দিন আনসারী সাহেবের এক কান্নাজড়িত ওয়াজ-এ এমনই একটি ঘটনা উঠে এসেছে, যা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে—বাবা-মায়ের মর্যাদা ইসলামে কতটা ঊর্ধ্বে।

এক যুবকের করুণ কাহিনী: মায়ের অভিশাপ

আলোচনার শুরুতেই হুজুর এক যুবকের গল্প বলেন, যে তার মায়ের সাথে চরম বেয়াদবি করেছিল। স্ত্রীর কথায় উত্তেজিত হয়ে সে তার মাকে এমন হাতে আঘাত করেছিল, যে হাতে লেগেছিল মায়ের হাজারো চুমু। ব্যথিত মা অন্তর থেকে ছেলের জন্য বদ দোয়া করে বসলেন:

  • "আল্লাহ যেন তোর এই হাত পচিয়ে দেয়।"
  • "তুই যেন আমার জানাজার নামাজ পড়তে না পারিস।"

যে ঘটনা আপনার চোখ খুলে দেবে: মায়ের এক ফোঁটা দুধের ঋণ এবং নবীর (সাঃ) কান্না মায়ের মুখের কথা আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। অল্পদিনের মধ্যেই সেই যুবকের হাতে পচন ধরে এবং শত চিকিৎসা সত্ত্বেও তা ভালো হয় না। অবশেষে যখন তার মায়ের মৃত্যুর খবর আসে, পথের সমস্যায় সে দেরি করে ফেলে এবং মায়ের জানাজায় শরিক হতে পারে না। মায়ের দুটি বদ দোয়াই অক্ষরে অক্ষরে ফলে যায়। এই emotional waz আমাদের শেখায় যে, বাবা-মায়ের মনে কষ্ট দিলে দুনিয়া ও আখেরাত—উভয়ই বরবাদ হয়ে যায়।

কবরের শাস্তি এবং নবীর (সাঃ) সুপারিশ

হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহর নবী (সাঃ) একবার জান্নাতুল বাকীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একটি নতুন কবরে এক যুবককে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে দেখেন। যুবকটি ‘মা, মা’ বলে চিৎকার করছিল। রহমতের নবী (সাঃ) সেই যুবকের জন্য আল্লাহর কাছে তিন-তিনবার সুপারিশ করলেন, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নবীর সুপারিশও কবুল করলেন না।

কবরের আজাব

আল্লাহ জানালেন, "হে বন্ধু! এই যুবকের মা এখনো দুনিয়ায় জীবিত এবং সে তার সন্তানের উপর অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। যতক্ষণ না তার মা তাকে ক্ষমা করবে, আমি আপনার সুপারিশ কবুল করব না।" এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, বাবা-মা যদি সন্তানের উপর অসন্তুষ্ট থাকেন, তবে স্বয়ং নবী (সাঃ) সুপারিশ করলেও মুক্তির আশা করা কঠিন।

বাবা-মায়ের খেদমত: জান্নাত লাভের সহজ পথ

বক্তা বলেন, বাবা-মাকে খুশি করা দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ কাজ। সামান্য একটু ভালোবাসা, একটু খেয়াল রাখা, বাজার থেকে ফেরার সময় তাদের জন্য একটি ফল নিয়ে আসা—এতেই তারা খুশি হয়ে যান। আর তাদের এই খুশিতেই আল্লাহ আমাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেন।

জান্নাত লাভের সহজ পথ

যারা বাবা-মাকে হারিয়েছেন, তাদের জন্য করণীয়:

  • তাদের জন্য দোয়া করা: "রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।"
  • তাদের পক্ষ থেকে দান-সদকা করা।
  • তাদের কোনো অপূর্ণ ওয়াদা থাকলে তা পূরণ করা।
  • তাদের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা।

মূল আলোচনাটি শুনুন (ভিডিও)

শেষ কথা

আসুন, আমরা বাবা-মায়ের মর্যাদা বুঝি। যারা জীবিত আছেন, তাদের সর্বোচ্চ খেদমত করি, আর যারা চলে গেছেন, তাদের জন্য দোয়া ও সদকার মাধ্যমে খেদমত জারি রাখি। কারণ, হাজার পীর-আউলিয়ার দোয়াও বাবা-মায়ের দোয়ার সমতুল্য হতে পারে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বাবা-মায়ের খেদমত করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।

এই শিক্ষণীয় islamic video-টি দেখুন এবং সম্পর্কিত আরেকটি ব্লগ পড়ুন:
জান্নাতি সাহাবীর গোপন আমল

আমাদের ফলো করে পাশে থাকুন

নতুন পোস্ট প্রকাশের সাথে সাথে আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন।

ফলো করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ

নবীনতর পূর্বতন