
জীবনে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কখনো দ্বিধায় পড়েছেন? যখন মনে হয়, সব পথই ভুলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তখন সঠিক পথ কোনটি?
ভূমিকা: জ্ঞান বনাম প্রজ্ঞা
ইসলামিক আলোচনা বা waz mahfil মানেই যে কেবল গুরুতর গম্ভীর বিষয় নিয়ে কথা হবে, তা নয়। মাঝে মাঝে কিছু শিক্ষণীয় বাস্তব কাহিনী আমাদের জীবনকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। বিখ্যাত ইসলামী আলোচক মুফতি মুজিবুর রহমান চট্টগ্রামী হুজুরের এমনই একটি new bangla waz সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি এমন এক মজার গল্প যা আমাদের শেখায়, জাগতিক জ্ঞান এবং ঈমানী প্রজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য কোথায় এবং কীভাবে প্রজ্ঞা দিয়ে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব পরিস্থিতি থেকেও সঠিক সমাধান বের করা যায়।
পরীক্ষার প্রেক্ষাপট: রাজার মেয়ের বিয়ের Mojar Golpo
এক রাজ্যে রাজার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সময় হলো। কিন্তু রাজা ও রানীর মধ্যে দেখা দিল মতভেদ। রাজা চাইলেন একজন ধার্মিক হুজুরের সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে, আর রানী চাইলেন একজন উচ্চশিক্ষিত মাস্টারের হাতে তার কন্যাকে তুলে দিতে।

এই দ্বন্দ্বের সমাধানে রাজা এক অভিনব পরীক্ষার আয়োজন করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, হুজুর এবং মাস্টার দুজনকেই একটি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে, তার সাথেই রাজার মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে।
মাস্টারের পরীক্ষা: জ্ঞানের মারাত্মক ভুল
প্রথমে মাস্টারকে পরীক্ষার জন্য ডাকা হলো। তাকে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হলো যেখানে চারটি জিনিস রাখা ছিল: একজন যুবতী নারী, দুজন বয়স্ক লোক, এক পেয়ালা মদ এবং একটি ধারালো তরবারি। মাস্টারকে বলা হলো, এই তিনটি কাজের মধ্যে যেকোনো একটি তাকে করতে হবে: হয় মদ পান করতে হবে, অথবা তরবারি দিয়ে বয়স্ক লোক দুটিকে হত্যা করতে হবে, নতুবা যুবতী মেয়েটির সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হতে হবে।

মাস্টার গভীর চিন্তায় পড়লেন এবং তার জ্ঞান দিয়ে হিসাব করলেন, তিনটিই কবিরা গুনাহ। খুন বা ব্যভিচারের দুনিয়াবী শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, অন্যদিকে মদ পানের শাস্তি ৮০ বেত্রাঘাত। এই ভেবে তিনি মদ পান করাকেই তুলনামূলক "ছোট পাপ" মনে করলেন। কিন্তু এখানেই ছিল তার সবচেয়ে বড় ভুল। মুফতি মুজিবুর রহমান তার Bangla Waz এ বলেন, ইসলামে মদকে "উম্মুল খবায়েছ" বা সকল পাপের মা বলা হয়েছে। মদ পান করার পর তার বিবেক-বুদ্ধি লোপ পায় এবং মাতাল অবস্থায় তিনি বাকি দুটি গুনাহও করে বসেন।
হুজুরের পরীক্ষা: ঈমানী প্রজ্ঞার অবিশ্বাস্য সমাধান
এবার হুজুরের পালা। তাকেও একই কক্ষে একই শর্ত দেওয়া হলো। কিন্তু হুজুরের চিন্তার ধরণ ছিল ভিন্ন। মাস্টার চিন্তা করেছিলেন 'কোন গুনাহটি ছোট?', আর হুজুর চিন্তা করলেন 'কীভাবে একটিও গুনাহ না করে পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া যায়?'

এই islamic waz অনুষ্ঠানে মুফতি মুজিবুর রহমান বলেন, হুজুর তার প্রজ্ঞা ও ঈমানের শক্তি দিয়ে এক চমৎকার উপায় খুঁজে বের করলেন। তিনি তরবারিটি হাতে নিয়ে মেয়েটির গলায় ধরে বললেন, "এই দুজন বয়স্ক লোককে সাক্ষী রেখে আমি তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছি। তুমি কবুল বলো, না হলে..."। ভয় পেয়ে মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে "কবুল" বলে ফেলল। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে বৈধ হয়ে গেল। এরপর হুজুর বয়স্ক লোক দুটিকে কক্ষ থেকে বের করে দিলেন। এখন ঘরের ভেতরে স্বামী-স্ত্রী একান্তে সময় কাটালে তা আর গুনাহ নয়, বরং সওয়াবের কাজ। এভাবে হুজুর একটিও গুনাহ না করে পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন।
এই গল্প থেকে আমাদের জন্য শিক্ষা
এই bangla golpo বা বাংলা গল্প-টি আমাদের কয়েকটি গভীর বার্তা দেয়:
- জ্ঞান বনাম প্রজ্ঞা: জাগতিক শিক্ষা আমাদের গুনাহের মধ্যে ছোট-বড় পার্থক্য করতে শেখাতে পারে, কিন্তু দ্বীনি প্রজ্ঞা আমাদের গুনাহ থেকে সম্পূর্ণ বেঁচে থাকার পথ দেখায়।
- কোনো পাপই ছোট নয়: মদপান আপাতদৃষ্টিতে ছোট পাপ মনে হলেও তা মানুষকে বিবেকহীন করে তোলে এবং আরও বড় অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়।
- সমাধানকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি: একজন মুমিনের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় সমস্যা নয়, বরং সমাধানের দিকে থাকে।
- আলেমদের সাহচর্যের গুরুত্ব: জীবনের প্রতিটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আলেম-ওলামাদের পরামর্শ গ্রহণ করা অপরিহার্য।
মূল আলোচনাটি শুনুন (ভিডিও)
উপসংহার
এই bangladeshi waz টি আমাদের সমাজের যুবকদের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা। আপনি যদি সম্পূর্ণ mahfil টি দেখতে চান, তবে ইউটিউবে Mufti Mujibur Rahman new waj লিখে সার্চ করতে পারেন। এমন শিক্ষণীয় আলোচনা আমাদের সবার শোনা উচিত।
সম্পর্কিত আলোচনা পড়ুন
সৎ মায়ের অত্যাচার ও এতিমের কান্না সম্পর্কিত সেই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি পড়ুন।
পোস্টটি পড়ুন
গলায় চাকু ধরে বিয়ে করা যায়েজ?
উত্তরমুছুন