
যখন কোনো মানুষ তার জন্ম থেকে পাওয়া বিশ্বাস আর দীর্ঘদিনের অভ্যাস ছেড়ে সত্যের সন্ধানে নতুন পথে যাত্রা করে, সেই মুসলিম হওয়ার গল্প হয় অনুপ্রেরণা এবং সাহসের এক জীবন্ত দলিল।
ভূমিকা: নও মুসলিমের আত্মকাহিনী
এটি শুধু একজন হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়ার সাধারণ ঘটনা নয়; এটি এক গভীর আত্ম-উপলব্ধি, ত্রিশ বছরের অন্ধকার শেষে খুঁজে পাওয়া এক চিলতে আলোর উপাখ্যান। এই কাহিনী আমাদের দেখায়, কীভাবে সত্যের আলো একজন মানুষকে তার আজন্ম লালিত বিশ্বাস থেকে বের করে এনে প্রশান্তির পথে পরিচালিত করতে পারে।
পূজার বেড়াজাল এবং যৌক্তিক সংকট
বক্তা নও মুসলিম আমিনুল ইসলাম আমিনী তার জীবনের গল্প শুরু করেন সেই সময়ের কথা দিয়ে, যখন তার পুরো জগৎটাই ছিল দেব-দেবীর পূজাকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, "পুরো ত্রিশটি বছর আমি কত দেবতার পূজা করেছি, আমার পক্ষে যন্ত্র ছাড়া তা বলা সম্ভব না।" তার মা তাকে শিখিয়েছিলেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ঘরের ফলক, চৌকাঠ, তুলসী গাছ এবং এমনকি গোয়ালঘরের গরুকেও ভক্তি জানাতে হতো। কিন্তু এই আপাত ভক্তির গভীরে ছিল এক বিশাল শূন্যতা এবং যৌক্তিক সংকট। তিনি দেখতেন, দেবতারা নিজেরাই একে অপরের সাথে দ্বন্দ্বে এবং মারামারিতে লিপ্ত। একজন নিজেকে আরেকজনের চেয়ে বড় প্রমাণ করতে ব্যস্ত। এই বিশৃঙ্খলাই তার মনে সত্য অনুসন্ধানের বীজ বুনে দেয়।
সত্যের প্রথম ঝলক: যে বইটি জীবন বদলে দিল
এই অসাধারণ hindu theke muslim howar golpo এর মোড় ঘুরে যায় খুবই সাধারণ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। পেশায় ব্যবসায়ী হওয়ায় তাকে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে হতো। এমনই এক ভ্রমণে তিনি কৌতূহলবশত একটি "নামাজ শিক্ষার বই" কেনেন। লুকিয়ে বইটি খুলে যখন তিনি বাংলায় কালিমা তাইয়্যেবার অর্থ পড়লেন, তার ভেতরে যেন এক বিপ্লব ঘটে গেল।

"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ"—অর্থাৎ, "আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।"
তিনি বলেন, "আমার অন্তরে একটা ধাক্কা লাগল।" তিনি ভাবতে লাগলেন, দীর্ঘ ত্রিশ বছরে তিনি কোনো দেবতার ক্ষেত্রেই এমন একচ্ছত্র, শক্তিশালী এবং দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা দেখেননি। এই একটি বাক্যই ছিল তার convert to islam যাত্রার প্রথম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ।
গভীর জ্ঞানার্জন ও মুক্তির সন্ধান
সত্য জানার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি এক মুসলিম বন্ধুর কাছ থেকে ‘ফাযায়েলে সাদাকাত’ বইটি নেন এবং গোপনে পড়া শুরু করেন। যতই পড়ছিলেন, ইসলামের যৌক্তিক বার্তা ততই তাকে মুগ্ধ করছিল। তিনি জানতে পারেন জাহান্নামের ভয়াবহতার কথা এবং উপলব্ধি করেন, যে দেবতারা নিজেদেরই রক্ষা করতে পারে না, তারা কীভাবে মানুষকে রক্ষা করবে?
তার এই বোধোদয় আমাদের সেই বেদুইনের কথা মনে করিয়ে দেয়, যে তার পূজনীয় দেবতার মুখে কুকুরের প্রস্রাব দেখে মূর্তিটি ভেঙে ফেলেছিল। কারণ, যে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না, সে কীভাবে অন্যের উপাস্য হতে পারে?

আলোর পথে চূড়ান্ত যাত্রা: বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে
অবশেষে সব দ্বিধা ও ভয় ঝেড়ে ফেলে তিনি সত্যকে গ্রহণ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার বিশাল জনসমুদ্রে গিয়ে তিনি খুঁজে পান তার কাঙ্ক্ষিত প্রশান্তি। সেখানেই লক্ষ লক্ষ মুসলিমের সাথে আল্লাহ পাক তাকে কালিমা পড়ে একজন converted muslim হিসেবে নতুন জীবন শুরু করার তৌফিক দান করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্পূর্ণ আত্মকাহিনীটি শুনুন (ভিডিও)
উপসংহার
এই নও মুসলিমদের কাহিনী শুধু একজন ব্যক্তির ধর্ম পরিবর্তনের গল্প নয়, এটি সত্য, যুক্তি ও ঈমানের এক শক্তিশালী উপাখ্যান। আজ তিনি একজন new muslim হিসেবে গর্বিত এবং আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, "যে নবীর উম্মত হওয়ার জন্য অন্যান্য নবীরাও দোয়া করেছেন, আমরা কোনো দরখাস্ত ছাড়াই সেই নবীর উম্মত হতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ।" তার এই hindu to muslim convert হওয়ার journey এখন বিভিন্ন মুসলিম মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে এবং আমাদের এটাই শেখায় যে, সত্য এক ও অদ্বিতীয়, এবং আল্লাহ যাকে চান, তাকেই সরল পথের দিশা দেন।
সম্পর্কিত আলোচনা পড়ুন
হযরত আলী (রাঃ) এর আদালতে ৮টি রুটির সেই বিস্ময়কর এবং নিখুঁত বিচার সম্পর্কে জানুন।
পোস্টটি পড়ুন