
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু সেই মানুষই কখন আল্লাহর দৃষ্টিতে সৃষ্টির নিকৃষ্টতম জীবে পরিণত হয়? চলুন, সেই উত্তর খুঁজি।
ভূমিকা: আল্লাহর দৃষ্টিতে মানুষের মর্যাদা
সম্প্রতি এক new waz মাহফিলে সিলেটের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আজিজুর রহমান আনসারী এই গভীর বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করেছেন, যা প্রতিটি মু'মিনের জন্য এক শান্তির আহ্বান। এই bangla waz থেকে পাওয়া শিক্ষাগুলোই আজ আমরা তুলে ধরব।
কুরআনের ঘোষণা: আল্লাহর চোখে কারা নিকৃষ্ট?
আলোচনার শুরুতেই পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত তুলে ধরা হয়, যেখানে আল্লাহ তা'আলা স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন: "নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট নিকৃষ্টতম জীব তারাই, যারা কুফরি করে এবং ঈমান আনে না।" (সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৫৫)
.webp)
এই আয়াতের আলোকে Azizur Rahman Ansari সাহেব ব্যাখ্যা করেন, পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী সমস্ত প্রাণীর মধ্যে তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যাদের অন্তরে ঈমান নেই। বাহ্যিকভাবে মানুষের আকৃতি থাকলেও, ঈমানের দৌলত ছাড়া আল্লাহর কাছে তাদের কোনো মূল্য নেই।
একটি বাস্তব উদাহরণ: বস্তুর আসল পরিচয় তার গুণে
বিষয়টি সহজে বোঝার জন্য কিছু চমৎকার উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরুন, আপনি বাজার থেকে একটি লাইট কিনলেন, কিন্তু সেটি জ্বলে না। আপনি কি তাকে 'লাইট' হিসেবে মূল্য দেবেন?
- একটি ১৬,০০০ টাকার মোবাইল, যা দিয়ে কল করা বা রিসিভ করা যায় না, তার কোনো মূল্য আছে কি?
- একটি দামি ঘড়ি, যা সঠিক সময় দেয় না, তাকে কি ঘড়ি বলা যায়?
- একটি ফ্যান, যা বাতাস দেয় না, সেটি কি আদৌ কোনো কাজের?
- আগুন, যার মধ্যে জ্বালানোর ক্ষমতা নেই, তাকে কি আগুন বলা যায়?

এই প্রতিটি বস্তুর নাম তার কর্ম বা বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভরশীল। ঠিক তেমনিভাবে, একজন মানুষের আসল পরিচয় তার ভেতরের ঈমানের আলোতে। যার ভেতরে ঈমানের আলো নেই, সে তার ‘মানুষ’ নামটি বহন করার যোগ্যতা রাখে না।
ঈমানের মর্যাদা: রাসুল (সাঃ) এর মজলিসের ঘটনা
ইসলামের ইতিহাস থেকে একটি অসাধারণ ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। মক্কার কিছু ধনী কাফের রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে প্রস্তাব দেয়, "আপনার মজলিসে যে সমস্ত নিম্ন শ্রেণীর, গরিব মানুষ (সাহাবায়ে কেরাম) বসে থাকে, তাদের তাড়িয়ে দিন। তাহলে আমরা আপনার কাছে এসে বসব।" তারা হযরত বিলাল (রাঃ) এর মতো সাহাবাদের দিকে ইঙ্গিত করেছিল। তখন আল্লাহ তা'আলা আয়াত নাজিল করে কঠোরভাবে সাবধান করে দেন এবং বলেন, "যারা সকাল-সন্ধ্যা তাদের রবকে ডাকে, তাদেরকে আপনার মজলিস থেকে এক মুহূর্তের জন্যও তাড়ানো যাবে না।" (সূরা আল-আন'আম: ৫২)।

আল্লাহর ঘরের হেফাজতকারী কে?
ঈমানের মর্যাদা কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, আল্লাহ তাঁর নিদর্শনগুলোকেও রক্ষা করেন। যেমন, আব্রাহা বাদশা যখন তার বিশাল হস্তী বাহিনী নিয়ে কাবা ঘর ধ্বংস করতে এসেছিল, তখন মক্কার নেতা আব্দুল মুত্তালিব বলেছিলেন, "উটগুলোর মালিক আমি, তাই আমি আমার উট ফেরত চাইতে এসেছি। আর কাবা ঘরের মালিক আল্লাহ্, তিনি নিজেই তাঁর ঘরের হেফাজত করবেন।" পরবর্তী ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা। আল্লাহ আবাবিল পাখি পাঠিয়ে আব্রাহার বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
মূল আলোচনাটি শুনুন (ভিডিও)
শেষ কথা
আজিজুর রহমান আনসারী সাহেবের এই আলোচনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, একজন মু'মিনের মর্যাদা আল্লাহর কাছে কত বেশি। বাহ্যিক ক্ষমতা বা রাজত্ব দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহর দৃষ্টিতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র মাপকাঠি হলো ঈমান।
এই ধরনের আরও ইসলামিক আলোচনা পেতে আমাদের Famous Islamic Channel বা অন্যান্য নির্ভরযোগ্য islamic channel এর সাথে যুক্ত থাকুন এবং ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিন।
সম্পর্কিত আলোচনা পড়ুন
জানুন কিভাবে এক বুজুর্গ হাজী ইউনুস সাহেবের নির্দেশে বন্য হাতিরা রাস্তা ছেড়ে দিয়েছিল। আল্লাহর ওলিদের মর্যাদা নিয়ে এক অলৌকিক ইসলামিক ঘটনা।
পোস্টটি পড়ুন